Hot!

জাম্বুরা খান আর প্রচন্ড শীতে পাতলা ফিন ফিনে কাপড় পড়ুন

জাম্বুরা খান আর প্রচন্ড শীতে পাতলা ফিন ফিনে কাপড় পড়ুন


ফলটির নাম বাতাবি লেবু। তবে জাম্বুরা নামে এটি বেশি পরিচিত। জাম্বুরা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন জাম্বুরা, বাদামি লেবু, বাতাবি লেবু, বড় লেবু ও ছোলম ইত্যাদি। জাম্বুরা  এক প্রকার লেবু জাতীয় টক-মিষ্টি ফল। এর ইংরেজি নাম Pomelo । কাচা ফলের বাইরের দিকটা সবুজ এবং পাকলে হালকা সবুজ বা হলুদ রঙের হয়। এর খোসা বেশ পুরু এবং খোসার ভিতর দিকটা ফোম এর মত নরম ।
লেবু জাতীয় ফলের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড়; যা ১৫-২৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট হয়ে থাকে।এর ওজন ১-২ কেজি হয়। এর আদিভূমি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গেলেও এই ফল পাবেন ভারত, চীন, জাপান, ফিজি, দক্ষিণ আফ্রিকা, এমনকি আমেরিকাতেও। তবে আলাদা আলাদা যায়গায় আপনি আলাদা আলাদা রকমের বাতাবী লেবু পাবেন। কোথাও কোথাও জাম্বুরার ভেতরের রসাল কোষগুলো হলুদ আবার কোথাও লাল বা গোলাপি হয়ে থাকে। বর্ষার শেষ পর্যায় থেকে শুরু করে শীত আসার আগ পর্যন্ত জাম্বুরার পূর্ণ মৌসুম। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছে ৩০০-৫০০ টি জাম্বুরা ধরে। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটির দামও সাধ্যের মধ্যে। একটি জাম্বুরা স্থান ভেদে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।

জাম্বুরার পুষ্টিগুণ......
প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য জাম্বুরায় রয়েছে খাদ্যশক্তি ৩৮ কিলোক্যালরি। প্রোটিন ০.৫ গ্রাম। স্নেহ ০.৩ গ্রাম। শর্করা ৮.৫ গ্রাম। খাদ্যআঁশ ১ গ্রাম। থায়ামিন ০.০৩৪ মিলি গ্রাম। খনিজ লবণ ০.২০ গ্রাম। রিবোফ্লেভিন ০.০২৭ মিলি গ্রাম। নিয়াসিন ০.২২ মিলি গ্রাম। ভিটামিন বি২ ০.০৪ মিলি গ্রাম।
 ভিটামিন বি৬ ০.০৩৬ মিলি গ্রাম। ভিটামিন সি ১০৫ মিলি গ্রাম। ক্যারোটিন ১২০ মাইক্রো গ্রাম। আয়রন ০.২ মিলি গ্রাম। ক্যালসিয়াম ৩৭ মিলি গ্রাম। ম্যাগনেসিয়াম ৬ মিলিগ্রাম। ম্যাংগানিজ ০.০১৭ মিলিগ্রাম। ফসফরাস ১৭ মিলিগ্রাম। পটাশিয়াম ২১৬ মিলিগ্রাম। সোডিয়াম ১ মিলিগ্রাম। জাম্বুরা একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। হাল্কা টক স্বাদের সুস্বাদু এই ফল ফলটি অত্যন্ত পুষ্টিকর।
উপকারিতা
জাম্বুরা ঠান্ডা অর্থাৎ শীত প্রতিরোধ কারী। জাম্বুরার পুরো মৌসুম প্রতিদিন অর্ধেক জাম্বুরা খেলে প্রচন্ড শীতেও পাতলা ফিন ফিনে কাপড় পড়ে ঘুরতে পারবেন।
প্রতিদিন জাম্বুরা খেলে সর্দি-জ্বর কাশী থেকে মুক্ত থাকবেন। সেজন্য মৌসুমের শুরু থেকেই জাম্বুরা খান।
 প্রতিদিন একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের যতটা ভিটামিন সিপ্রয়োজন, একটা জাম্বুরাতে তার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়।

 এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে।
 জাম্বুরাতে বিদ্যমান বায়োফ্লভনয়েড বেশি থাকায় ব্রেস্ট ক্যান্সারের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
ভিটামিন সিবেশি থাকায় রক্তনালির সংকোচন-প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ডায়াবেটিস, জ্বর, নিদ্রাহীনতা, মুখের ভেতরে ঘা, পাকস্থলী ও অগ্ন্যাশয়ের বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

জাম্বুরা খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে। একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের হৃদরোগের হাত থেকে রক্ষা করে।
নিয়মিত জাম্বুরা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ও পেটের নানা রকম হজমজনিত সমস্যার প্রতিকার হয়।
জাম্বুরা এসিডিটি বা গ্যাস প্রতিহত করে বলে পাকস্থলী সুস্থ থাকে।
জাম্বুরায় কারনিটিন পামিটয়েলট্রানসফারেজ নামের এক ধরনের উৎসেচক আছে। এটা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।

জাম্বুরা শরীরের বিষাক্ত রক্ত পরিষ্কার করে শরীরকে সুস্থ রাখে।
যে কোনো ধরনের কাটা ছেঁড়া ও ক্ষত সারাতে জাম্বুরার জুড়ি নেই।
যকৃত, দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় জাম্বুরা অতুলনীয়।
তাছাড়া অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকায় জাম্বুরা বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং বুড়িয়ে যাওয়া বিলম্বিত করে।
ফলটিতে ক্যালরি কম থাকায় ডায়াবেটিস ও স্থুলকায়দের জন্য খুবই উপকারী।

জাম্বুরায় আরও আছে পটাশিয়াম। পায়ের নানা রকমের ব্যথা এবং হাড় ক্ষয়রোধেও জাম্বুরার ভূমিকা রয়েছে। তবে পটাশিয়াম থাকার কারণে কিডনি বিকলতার রোগীরা জাম্বুরা বেশি পরিমাণে খেতে পারবেন না। আবার যাঁদের রক্তচাপ কম, তাঁদেরও একটু সাবধানে খেতে হবে।

জাম্বুরা লেবু সাধারণত খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের কোষগুলো খাওয়া হয়। এছাড়া জুস করে, ফ্রুট সালাদ হিসেবে, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্ডি বা চকোলেট তৈরিতে বাতাবি লেবু ব্যবহার করা হয়। মিষ্টি স্যুপ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় জাম্বুরা


0 comments:

Post a Comment