রসুনের অসাধারণ স্বাস্থ্যকর
গুণাগুন
![]() |
রসুন |
রসুন হলো পেঁয়াজের জ্ঞাতি ভাই। তারা এক বংশের। রসুনের আদি
বাড়ি মধ্য এশিয়ায়। তবে তার বিস্তার এখন সারা পৃথিবীতে। ইতিহাসে দেখা যায়,
প্রায়
সাত হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ রসুন খেয়ে অভ্যস্ত। প্রাচীন গ্রিসের বিখ্যাত
চিকিৎসক এবং মেডিসিনের জনক হিপোক্রেটস, সার্জন এবং দার্শনিক গ্যালেন
রসুনকে ওষুধ হিসেবে ব্যবহারের পরামর্শ দিতেন। আধুনিক গবেষণায়ও উঠে এসেছে এমন সব
তথ্য। বাজারে কিন্তু দুই ধরনের রসুন পাওয়া যায়, একটিমাত্র
কোষ নিয়েই পুরো একটি রসুন, অন্যটি হলো অনেকগুলো কোষ নিয়ে তৈরি।
বহুকোষীর তুলনায় এক কোষী রসুনে পুষ্টিমান বেশি থাকে। এক কোষী রসুনটি বড় হলে
অর্ধেক করে কিংবা বহুকোষী রসুনের একটি কোষ খেতে পারেন প্রতিদিন।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা রসুনের পুষ্টিমানঃ
শক্তি-----১৪৯ kcal, শর্করা—৩৩.৬ গ্রাম,
চিনি—১গ্রাম, ফাইবার –২.১গ্রাম, চর্বি —০.৫গ্রাম,
প্রোটিন – ৬.৩৬ গ্রাম।
ভিটামিন সমূহঃ
থায়ামিন (B1) --- 0.২ মি গ্রাম, রিবোফ্লাবিন (বি২)–০.১১ মি গ্রাম,
ন্যায়সেন — ০.০৭ মি গ্রাম,
প্যান্টোথেনিক এসিড (বি৫) – ০.৫৯৬ মি গ্রাম
ভিটামিন (বি৬)—১.২৩৫ মি গ্রাম, ফোলেট (বি৯)—৩ মি গ্রাম
ভিটামিন সি—৩১.২ মি গ্রাম।
ধাতুসমূহঃ
সোডিয়াম—১৭ মি গ্রাম,
ক্যালসিয়াম-১৮১ মি গ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম-২৫ মি গ্রাম,
আয়রন-১.৭ মি গ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ –১.৬৭২মি গ্রাম, ফসফরাস-১৫৩মিগ্রাম
পটাসিয়াম—৪০১ মি গ্রাম,
জিঙ্ক-১.১৬ মি গ্রাম, সেলেনিয়াম-১৪.২ মি গ্রাম।
উচ্চ রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করে:
গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রমাণ সাইজের এক কোয়া রসুন
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার
অ্যাডিলেড ইউনিভার্সিটির গবেষক ডা. কারিন রিড বলেন, যারা কাঁচা
রসুন খেতে পারেন না, তারা গার্লিক পাউডার বা রসুন গুঁড়ো খেতে
পারেন। তিনি জানান, রসুনের অ্যালিসিন যৌগটি রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করে। ৬০০ থেকে ৯০০ মিলিগ্রাম ডোজের রসুনের গুঁড়োয় তা ৩৬ থেকে ৫৪
মিলিগ্রাম অ্যালিসিন
থাকে। বড় সাইজের রসুনের এক কোয়ায় অ্যালিসিন থাকে ৫ থেকে ৯ মিলিগ্রাম। ডা. রিড এবং
তার সহযোগী গবেষকরা জানিয়েছেন, সাধারণত যে সব ওষুধ দিয়ে ব্লাড প্রেসার
নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়, যেমন বিটা ব্লকারস ও এসিই ইনহিবিটর,
এদের
সমান প্রেসার নিয়ন্ত্রণী ক্ষমতা রয়েছে রসুনের গুঁড়োয় ও কাঁচা রসুনে।
ক্যানসারের ঝুঁকি এড়াতে
প্রতিদিন এক টুকরো করে রসুন খেলে অনেক ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি
এড়ানো যায়। বিশেষত স্তন ক্যানসার এবং প্রস্টেট ক্যানসারের বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর
ভূমিকা পালন করে।
হৃৎপিণ্ডের সুরক্ষায়
রসুন রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে, রক্তনালিতে
রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখে। রসুন হলো অ্যাসপিরিন ওষুধের বিকল্প। এ ছাড়া রসুন রক্তের
খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে হৃদ্স্বাস্থ্য সুরক্ষিত থাকে।
রোগ প্রতিরোধে
অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল আর অ্যান্টি ভাইরাল গুণে সমৃদ্ধ রসুন।
তাই ভাইরাসজনিত জ্বর, সর্দি, কাশি ইত্যাদির প্রকোপ কমাতে সহায়তা
করে। এ ছাড়া শরীরের রোগ প্রতিরোধের সক্ষমতাও বাড়ায় রসুন।
প্রাকৃতিক
অ্যান্টিবায়োটিক:
গবেষণায় দেখা গেছে, খালি পেটে রসুন খাওয়া হলে এটি একটি শক্তিশালী
অ্যান্টিবায়োটিক এর ন্যায় কাজ করে। সকালে নাস্তার পূর্বে রসুন খেলে এটি আরও
কার্যকরীভাবে কাজ করে। তখন খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলো উন্মুক্ত হয়
এবং তখন রসুনের ক্ষমতার কাছে তারা নতিস্বীকার করে। তখন শরীরের ক্ষতিকর
ব্যাকটেরিয়াসমূহ আর রক্ষা পায় না।
অন্ত্রের জন্য
ভাল:
খালি পেটে রসুন খাওয়ার ফলে যকৃত এবং মূত্রাশয় সঠিকভাবে
কাজ করে। ফলে পেটের বিভিন্ন
সমস্যা দূর হয় যেমন- ডায়রিয়া। এটা হজম ও ক্ষুধার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। এটি
স্ট্রেস দূর করতেও সক্ষম। স্ট্রেস বা চাপের কারনে আমাদের গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যায়
পরতে হয়। তাই, খালি পেটে রসুন খেলে এটি
আমাদের স্নায়বিক চাপ কমিয়ে এ সকল সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
শরীরকে
ডি-টক্সিফাই করে:
অন্যান্য ঔষধের তুলনায় শরীরকে
ডি-টক্সিফাই করতে রসুন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রসুন প্যারাসাইট, কৃমি পরিত্রাণ, জিদ, সাঙ্ঘাতিক জ্বর, ডায়াবেটিস, বিষণ্ণতা এবং ক্যান্সার এর মত বড় বড় রোগ প্রতিরোধ
করে।
শ্বসন:
রসুন যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, ফুসফুসের কনজেশন, হাপানি,
হুপিং কাশি ইত্যাদি প্রতিরোধ
করে। রসুন এ সকল রোগ আরোগ্যের মাধ্যমে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।
যক্ষ্মা প্রতিরোধক:
আপনার যদি যক্ষ্মা বা টিবি
জাতীয় কোন সমস্যা ধরা পড়ে, তাহলে সারাদিনে
একটি সম্পূর্ণ রসুন কয়েক অংশে বিভক্ত করে বার বার খেতে পারেন। এতে আপনার যক্ষ্মা
রোগ নির্মূলে সহায়তা পাবেন।
যৌবন দীর্ঘ স্থায়ি হয়ঃ
প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক কোয়া কাঁচা রসুন খেলে শরীরের যৌবন দীর্ঘ
স্থায়ী হয় । যারা পড়ন্ত যৌবনে চলে গিয়েছেন, তারা প্রতিদিন দু’কোয়া রসুন খাঁটি গাওয়া ঘি-এ ভেজে মাখন মাখিয়ে খেতে পারেন।
তবে খাওয়ার শেষে একটু গরম জল বা দুধ খাওয়া উচিৎ। এতে ভাল ফল পাবেন।
রসুন এবং মধুর স্বাস্থ্যগুণঃ
রসুনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীরের অভ্যন্তরীণ
অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করে। এছাড়া রসুনের অ্যালিসিন উপাদান কোলেস্টেরলের মাত্রা
কমিয়ে দেয়, রক্তজমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
এটি দেহে অ্যান্টি-ক্যান্সার এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল প্রভাব ফেলে থাকে।
বিশুদ্ধ মধুতে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, এনজাইম, আয়রন, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম এবং সেলিনিয়াম রয়েছে।
কয়েক কোয়া রসুন ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে ২ টেবিল চামচ মধুর সঙ্গে
মেশান। মিশ্রণটি সকালে খালি পেটে খান। ৭ দিন নিয়মিত খেলে দূরে থাকতে পারবেন
বিভিন্ন রোগবালাই থেকে। জেনে নিন রসুন ও মধু একসঙ্গে শরীরের কী কী উপকার করে-
.শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় রসুন-মধু।
.গলা ব্যথায় স্বস্তি পেতে এ দুটি উপাদান একসঙ্গে খেতে পারেন। গলার খুসখুসে ভাবও কমাবে এটি।
.মধু ও রসুন ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
.রসুন ও মধু একসঙ্গে খেলে দূর হয় ঠাণ্ডা লাগার অস্বস্তি। সর্দি-কাশিতে এটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
.ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করে মধু-রসুন।
.গলা ব্যথায় স্বস্তি পেতে এ দুটি উপাদান একসঙ্গে খেতে পারেন। গলার খুসখুসে ভাবও কমাবে এটি।
.মধু ও রসুন ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করে।
.রসুন ও মধু একসঙ্গে খেলে দূর হয় ঠাণ্ডা লাগার অস্বস্তি। সর্দি-কাশিতে এটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে।
.ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করে মধু-রসুন।
রসুনের খারাপ দিক:
রসুন সবার জন্যই ভালো, তবে রসুন যেহেতু রক্ত জমাট
বাঁধতে বাধা দিয়ে অ্যাসপিরিনের মতো কাজ করে, সেহেতু
গর্ভকালে রসুন আলাদা করে না খাওয়াই ভালো। এ ছাড়া বড় কোনো অস্ত্রোপচারের পরেও
কাঁচা রসুন খাওয়ায় খানিকটা বিধিনিষেধ আছে।
যাদের রসুন
খাওয়ার ফলে এলার্জি হবার আশঙ্কা রয়েছে বা হয় তারা অবশ্যই কাঁচা রসুন খাওয়া থেকে
বিরত থাকুন। যাদের রসুন খাওয়ার ফলে মাথা ব্যথার সমস্যা হয়, বমির প্রাদুর্ভাব হয় বা অন্য কোন সমস্যা দেখা যায়
তাদের জন্য কাঁচা রসুন না খাওয়াই ভাল। এ ছাড়া সবাই রসুন খেতে পারবেন
নিশ্চিন্তে।
Grand Casino Resort Map & Directions - Mapyro
ReplyDeleteThe Grand Casino Resort is a 문경 출장마사지 casino 과천 출장마사지 hotel located in Maricopa, Arizona. Maricopa 광주 출장샵 Casino Resort is a 의왕 출장샵 casino and hotel located in 경상북도 출장샵 Maricopa, Arizona.